ডেস্ক নিউজ:
খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন সফল করতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের জেলা-জেলায় যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয়তাবাদী ঘরানার কয়েকজন বুদ্ধিজীবী। স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নেতৃত্বে এই সফরে পুরো নির্বাহী কমিটির সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করারও চিন্তা করতে বলেছেন তারা। শনিবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিশেষ বৈঠকে তারা এই পরামর্শ দেন।
বৈঠকে প্রথমে চারজন বুদ্ধিজীবী, শেষ দিকে আরও দু’জন অংশ নেন। এরমধ্যে প্রথমে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ, সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী। পরে যোগ দেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও কবি আবদুল হাই শিকদার।
বৈঠকসূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার গ্রেফতার-পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিএনপির করণীয় কী, এ নিয়েই বৈঠক বসেছিল। এতে বিএনপির সিনিয়র অন্তত ১০ জননেতা অংশ নেন। যদিও বৈঠকে যোগ দিয়েই ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রশ্ন তোলেন, স্থায়ী কমিটির বাকি সদস্যদের অবস্থান কোথায়? যারা অসুস্থ, তারা যেন প্রয়োজনে হুইল চেয়ারে করে কার্যক্রমে যুক্ত হন, এ পরামর্শও দেন তিনি।
জানতে চাইলে বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন বুদ্ধিজীবী বলেন, ‘বৈঠকে বুদ্ধিজীবীরা বিএনপির বর্তমান অবস্থানের প্রশংসা করেছেন। এছাড়া দলটির শান্তিপূর্ণ ধারা অব্যাহত রাখতে তারা নেতাদের বলেছেন।’
খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন সফল করতে জেলায়-জেলায় সফর করার আহ্বান জানান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নেতৃত্বে নির্বাহী কমিটির ২০/৩০ জন সদস্যের সমন্বয়ে প্রত্যেকটি টিম গঠন করতে বলা হয় বৈঠকে। এই প্রস্তাবগুলো বিএনপি ভেবে দেখবে বলেও সূত্রের দাবি।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ভাষ্য, এখনই বিএনপি নেতাদের জেলায়-জেলায় সফরে যাওয়া উচিত। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘অসুস্থ হলে নেতারা হুইল চেয়ারে করে যেতে পারেন। এতে জনগণের সহানুভূতি আরও বাড়বে।’
খালেদা জিয়ার মামলার কাগজপত্র এতদিনেও না পাওয়ায় হাইকোর্টে যাওয়ার পরামর্শ দেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এই প্রসেঙ্গ তিনি বাংলা ট্রিবিউন বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মামলার কাগজপত্র দিচ্ছে না। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এটা একদিনের মধ্যে পাওয়ার কথা ছিল। বিষয়টাকে হাইকোর্টে নিয়ে যাওয়া উচিত বিএনপির।’
যদিও এ বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মামলার রায়ের সার্টিফায়েড কপির জন্য কাল (রবিবার) আদালতে যাবো। সেখানে কোনও ব্যবস্থা না হলে অন্য চিন্তা করা যাবে। তবে এখনই উচ্চ আদালতে যাওয়ার পরিকল্পনা নেই।’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘খালেদা জিয়া টাকা মেরেছেন, এ কথা রাস্তার মানুষ বিশ্বাস করে না। কারণ, টাকার জায়গায় টাকা আছে।’
বৈঠকে অংশ নেন ড. মাহবুব উল্লাহ। এ প্রতিবেদকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এটা নিছকই সাধারণ বৈঠক। বিশেষ কিছু নয়।’ একই উত্তর দেন সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহও। ব্যস্ত থাকার কারণ উল্লেখ করে তিনি কথা বলতে পারবে না বলে জানান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা কয়েকজন সিনিয়র বুদ্ধিজীবীকে দাওয়াত দিয়েছিলাম। আমরা ভবিষ্যতে বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে বড় আকারে বসতে চাই। এ জন্যই আজকের এই বৈঠক।’
পাঠকের মতামত: